হলফনামা লেখার নিয়ম (বিয়ে, জমি, মামলা, তালাকনামা, নাম পরিবর্তন)

হলফনামা কি

কোন বিষয় সত্যতা যাচাই করার জন্য স্টাম্পের উপর যে লিখিতভাবে বা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাকে হলফনামা বলে। উদাহরণ স্বরুপ:- ১। জমি কেনা বেচার জন্য হলফনামা করা হয়, ২। বিয়ে বিষয় সংক্রান্ত বা বিয়ে দেওয়া বা বিয়ে বিচ্ছেদ করার জন্য হলফনামা, ৩। যে কোন নাম পরিবর্তন ও নাম সংশোধন করার ক্ষেত্রে ৪। মামলা মোকদ্দমা বিষয় হলফনামা করা হয়, ৫। যে কোন দোকানের পজেশন হস্তান্তর ব্যবপারে হলফনামা করা হয় ৬। পুরাতন মোটরসাইকেল ক্রয় বা বিক্রয় করার জন্য ৭। আপোষনামার বিষয় হলফনামা করা হয়।মৌখিক কোথাগুলো লিখিতভাবে প্রকাশ করাকেই হলফ নামা বলে।

হলফনামায় কি কি উল্লেখ করতে হবে বা থাকতে হবে

হলফনামা একটি লিখিত বিষয়। এটি লিখিত থাকতে হবে। হলফকারীর সঠিক আইডি কার্ড অনুযায়ী পূর্ণ নাম, ঠিকানা, বয়স, জাতীয়তা(বাংলাদেশী) যে পেশায় থাকবে শেই পেশায় উল্লেখ করতে হবে, অবশ্যই ধর্ম, জাতীয় পরিচায় পত্র নাম্বার দিতে হবে, হলফকারী কি বিষয় লিখবেন তা উল্লেখ করতে হবে এবং কি বিষয় হলফ করবে সেই দিতে হবে এবং কেন কেন লিখবে সেই বিষয় উল্লেখ করতে হবে।

জমি জমার ক্ষেত্রে হলফনামা করতে যা যা লাখবে

যদি কোন জমি জমা কেনা বেচা অথবা ক্রয় বিক্রয় বা বন্ধক হলে জমির দলিল এর কাগজ পত্রের বিবরণ দিতে হবে। জমির সকল তফসিল দিতেহবে। জমির পরিমান কতটুকু তা দিতে হবে। জমির মালিকের নেশনাল আইডি কার্ড অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে।

বিয়ে বিষয় হলফনামা করতে যা যা লাগবে

বিবাহরে বিষয়সংক্রান্ত হালে স্বামী ও (স্ত্রীর (ছেলে এবং মেয়ে) উভয়ের জাতীয় পরিচয়পপত্র অনুযায়ী সঠিক নাম ও ঠিকানা এবং বয়স উল্লেখ করতে হবে। তাদের বাবা-মায়ের নাম ও ঠিকানা ID কার্ড অনুযায়ী দিতে হবে। পেশা উল্লেখ করতে হবে। দেনমোহরের টাকা উল্লেখ্য করতে হবে। পাঁচপোর্ট সাইজের রংঙ্গন ছবি ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের থাকতে হবে।

বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের হলফনামা

বিবাহ করার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো প্রয়োজন ঠিক সেই সেই বিষয় উল্লেখ করতে হবে। সকল প্রকার সঠিক তথ্য দিতে হবে। এবং কি বিষয়ে নিয়ে তালাক হয়েছে সেই বিষয়টি স্পষ্টভাবে হলফনামায় সেই বিষয় উল্লেখ করতে হবে। যেই ব্যাক্তি তালাক করতে শুধুমাত্র সেই ব্যাক্তি তালাকের কাগজে বা হলফ নামায় স্বাক্ষর দিতে হবে। যেই তারিখে তালাক নামা করবেন সেই তারিখে সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে।

নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে হলফনামা

হলফকারীরর পূর্বেনা পরিবর্তন করিয়া সঠিক নাম হলফনামায় লিখতে হবে। যে ব্যাক্তি হলফ করবে সেই ব্যাক্তির পাসপোর্ট সাইজের ছবি সত্যায়িত করে দিতে হবে এবং স্বাক্ষর করতে হবে। হলফাকারী যা লিখবে সেখান একজন যে কোন আইনজীবীর মাধ্যমে হলফের কাগজে শনাক্ত করতে হবে। আইনজীবীকে উল্লেখ করতে হবে। যা বুঝে যে হলফকারীকে তা সামনে উপস্থিত করা হয়েছে। সকল তথ্যের বিষয়ের উপর ভিত্তি করে মনে রাখতে হবে যে, যে বিষয়ে হলফ করবে সেই বিষয়ে যেই ব্যাক্তি হলফ করা হইতেছে সেই ব্যাক্তি সত্যা বিষয়টি যেনো জোরালো ভাবে উপস্থান করার করা।

কীভাবে সম্পাদন করতে হবে

হলফনামা করতে হলো আপনাকে ননজুডিশিয়াল ২০০/- টাকার স্ট্যাম্পে সম্পাদন করতে হবে। যদি আপনি বিবাহ বিচ্ছেদ হলফনামা করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিম্ন ৫০০/- টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফ নামা সাজাতে হবে। আপনার হলফনামা করা হয়ে গেলে আপনার লিখিত যে কপিটি আছে সেটি( বা কম্পোজ বা টাইপ) অবশ্যই নোটারী পাবলিক যে কোন প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাচিষ্ট্রেট এর কাছে অবশ্যই সত্যায়ন করতে হবে। সঠিক নিয়ম হলো যে ব্যাক্তি হলফনামাটি করলেন বা করবেন, তিনি সেই ব্যাক্তি নোটারী পালিক বা প্রমত শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাচিষ্ট্রেট সামনেই আপনার হলফনামাটি সম্পর্কে সত্যপাঠ করবেন। নোটারী পাবলিক বা ম্যাজিস্ট্রেট হলফনামাটির বিষয় সঠিকভাবে যাচাই কিংবা বাচাই করে নোটারী পাবলিক স্বাক্ষর দিবেন যেনি নোটারী পাবলিত করবেন তিনি অবশ্যই একটি বিশেষ সরকারী সিল ব্যবহার করে একটি সঠিক ক্রমিক নং বসাবেন। হলফনামাটির মুল কপি থেকে একটি নকল কপি তার কাছে রেখে দিবেন।

জেনে রাখুন

আমরা জানি কোন মামালা মোকদ্দমা দায়ের করিলে সেই বিষয়ে হলফনামা আপনার আদলতে দাখিল করিতে হইবে। বিশেষ করে দেওয়ানি মোকদ্দমার অন্তবর্তীকালীন কোন প্রতিকার চাইলে এর সঠিক জবাব দিলে যার বিচার করা হয় সেই বিচার প্রার্থীকে হলফনামা দিতে হবে দাখাস্তের যে জবাব লিখে দিবে সেই জবাবের সাথে। এই সকল হলফনামায় কোন প্রকার ছবির প্রয়োজন নাই। কিন্তু আদালতে সেরেস্তাদারের সামনেই অবশ্যই সহি বা স্বাক্ষর করিতে হইবে। সেরেস্তাদার সেটি সঠিকভাবে যাচাই কিংবা বাচাই করে আদালেত প্রেরণ করিবেন।

জমির কেনা বেচার বিষয় হলফানামা

যদি কেউ জমি জমা কেনা-বেচা করেন । সে ক্ষেত্রে জমির দলিলের নিবন্ধনের সময় আপনার হলফনামাটি দিতে হবে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে।

কিভাবে মৃত বাবা বা মায়ের পেনশনের টাকা হলফনামা করবেন?

যদি আপনার বাবা ও মা মারা যায় তাদের পেনশনের টাকা উঠানোর জন্য, সে ক্ষেত্রে হলফনামা একান্ত প্রয়োজন। যেখানে আপনা বাবা ও মা চাকুরী করিতেন এবং যে ব্যাংকে টাকা উঠাতেন। সেই ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করার জন্য আপনার আপনার মৃত বাবা ও মায়ের পেনশনেসর টাকা উঠানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই কোর্ট এফিডেভিট বা কোন উকিল এর কাছে হলফনামা করতে হবে।

কোথায় আপনার পিতার পেনশনের টাকা হলফনামা করবেন?

আপনার নিজ জেলায় গিয়ে আপনি আপনার বাবা ও মায়ের চাকুরীরর পেনশনে টাকা উত্তোলন করার জন্য আপনার জেলার উকিলকে বা আপনার পরিচিত উকিলকে আপনার মৃত বাবা ও মায়ের সকল তথ্য দিলে আপনাকে স্টাম্পের উপর একটি লিখিতভাবে এফিডেভিট করিয়ে দিবেন। সেই এফিডেভিটটি হলো আপনার বাবা ও মায়ের পেনশনের টাকা উত্তোলন করা জন্যই হলো হলফনামা।

কিভাবে পিতার পেনশনের টাকা উত্তোলন করবেন, তার হলফ নামার ফরমেট?

উদাহরণ স্বরুপঃ- নিম্নের আমি একটি সঠিকভাবে হলফনামা করিয়েছি। সেটা দেখে আপনি আপনার সঠিক তথ্যগুলো দিয়ে। আপনার হলফনামাটি তৈরী করবেন।

সরাসরি একটি লিখিত ফরমেট দেখার জন্য
এখানে ক্লিক করুন ডাউনলোড

হলফনামা লেখার নিয়ম (বিয়ে, জমি, মামলা, তালাকনামা, নাম পরিবর্তন)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url